জাম খেলে শরীর যে উপকারগুলি হয়ে থাকে তা জানুন
আসসালামু আলাইকুম আপনাকে এই আর্টিকেলে স্বাগতম আজকের এই আর্টিকেলে আমি মজাদার ফল জাম এর উপকারিতার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি যদি আপনার জামের উপকারিতা সম্পর্কে কোন ধারণা না থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন
জাম ফলটি খেয়ে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি যা আপনার শরীর সুস্থ রাখতে থাকে
সূচিপত্রঃ জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
নিচের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
- ইনফেকশন ভালো করে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- পরিপাকে সাহায্য করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
- মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- জামের বিচি খাওয়ার নিয়ম
- জাম গাছের ছালের উপকারিতা
ইনফেকশন ভালো করে
জাম গাছের বাকোল পাতা ও বীজ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়
ম্যালিক এসিড গ্যালিক অ্যাসিড অক্সালিক অ্যাসিড এবং ত্যানিন জামে থাকে যা বিভিন্ন
ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে সাহায্য করে এ কারণেই জাম ফলটি ম্যালেরিয়া রোধী
ব্যাকটেরিয়া রোধী হিসেবে কাজ করে
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
জামে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন এলাজিক অ্যাসিড যা হৃদরোগের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এই উপাদানগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ
করে বলে কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে
আরো পড়ুনঃ জাম খেলে যে সমস্ত রোগ সারে
হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয় তাছাড়াও হাইপারটেনশন প্রতিরোধ সাহায্য
করে জাম কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে ১০০ গ্রাম জামে 55 গ্রাম
পটাশিয়াম থাকে
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা সামান্য কারণে-অকারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে বা শরীর
ক্লান্তি বোধ করে এর প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম থাকে যদি
মানব দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতার কম থাকে তাহলে ছোট ছোট সামান্য বিষয়েই অসুস্থ
হয়ে পড়ে যা একসময় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়
তাই আমাদের সকলের খেয়াল রাখা উচিত যেন আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা
যথেষ্ট থাকে বা নিয়ন্ত্রণে থাকে এই কালো জাম ফলটির সাহায্যে আপনি আপনার রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন বা বৃদ্ধি করতে পারবেন কেননা জামাই
রয়েছে আইরন পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে থাকে
আর এ ধরনের ভিটামিন গুলো বা উপাদানগুলো আপনি খুব সহজেই জাম থেকে পেয়ে যাবেন যা
আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে তাই অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত
জাম রাখুন এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
পরিপাকে সাহায্য করে
আয়ুর্বেদিক ওষুধে জাম পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময় এছাড়াও
মুখের স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয় জাম পাতা
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
ক্যান্সার প্রতিরোধে জাম ফলটি ভীষণ কার্যকরী এক গবেষণায় জানা গেছে জামে থাকা
উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
জামে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সাইড ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য আছে বলে জানা যায় যা
আপনার মুখে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বেশ ভালো কাজ করে জামে থাকা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার মুখে সংক্রমণ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার
সাথে যুদ্ধ করে আপনার ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে তাছাড়াও এই জাম দাঁত ও
মাড়ি জন্য খুবই কার্যকরী
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
জামে ক্যালোরি খুব কম থাকে যার কারণে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য জাম
ফলটি একদম নিরাপদ খাবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী জামে রয়েছে পলিফেনলিক
উপাদান যা আপনার ডায়াবেটিস চিকিৎসায় উপকারী বর্তমানে অনেকেই এই ডায়াবেটিসে
ভুগে থাকেন
আর এই ডায়াবেটি স নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা এবং মেডিসিন নিয়ে
থাকেন তারপরও অনেক সময় দেখা যায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করা খুব কষ্টকর হয়ে
যায় সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় এই জাম ফলটি রাখতে পারেন যা আপনার
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে
ওজন কমাতে সাহায্য করে
অনেকেই রয়েছেন যারা ওজন কমানোর জন্য এই জাম ফলকে বেছে নিয়েছে এক কাপ জামে থাকে
মাত্র ৭৫ গ্রাম ক্যালোরি ক্যালোরি কম থাকার কারণে এটি ওজন কমানোর জন্য একটি
উপযুক্ত উপকরণ
জামের বিচি খাওয়ার নিয়ম
জামের অনেক উপকারিতা রয়েছে জামের বিচি জামের পাতা এবং জাম গাছের ছাল এসব খুবই
উপকারী চামের বিচি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে তাই চলুন
জেনে নিন আপনি কিভাবে জামের বিচি খেতে পারবেন
আরো পড়ুনঃ আপনি জামের সাথে জামের বিচি কেন খাবেন
- সর্ব প্রথমে আপনাকে জাম থেকে বিচিগুলোকে ছড়িয়ে নিতে হবে
- এরপর বিচিগুলো এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে যেন বিচির গায়ে কোনরকম আঁশ লেগে না থাকে
- এবারে বিচিগুলোকে সুন্দর করে তিন থেকে চার দিন রোদে শুকাতে হবে
- এখন বিচিগুলোর বাইরের অংশটুকু ভেঙে ভিতরের সবুজ অংশটুকু নিতে হবে
- আবারও এই সবুজ অংশটিকে কয়েকদিন রোদে শুকাতে হবে
- এবারে শুকনো বিচি গুলোর গুড়া করে নিতে হবে
- এবার গুড়ো গুলোকে চালুন দিয়ে সুন্দর করে চেলে নিতে হবে
- এখন গুড়াগুলো একটি পরিষ্কার বায়ুরোধক কাচের বোতলে রাখতে হবে
- নিন এখন তৈরি হয়ে গেল জামের বিচের গুড়া এটি আপনি প্রতিদিন খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বিচির গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারবেন খেতে অনেক উপকার পাবেন
জাম গাছের ছালের উপকারিত
জাম এবং জামের বিচির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপরদিকে জাম গাছের ছালেরও বেশ
উপকারিতা রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জাম গাছের ছাল
আমাদের কি কি উপকার করে থাকে
শরীরের কোথাও ক্ষত হয়েছে কিন্তু সেই ক্ষত পূরণ হচ্ছে না এক্ষেত্রে আপনি এই জাম
গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারেন এর জন্য সর্বপ্রথমে আপনাকে কিছু জমে ছাল সংরক্ষণ
করতে হবে তারপর এই ছাল কে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে এবারে চিকন করে গুড়া করে
নিতে হবে এখন আপনি এই জাম গাছের ছালের গুড় আপনার কত স্থানে লাগান সহজে এবং দ্রুত
আপনার ক্ষত পূরণ হয়ে যাবে
যাদের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে তাদের জন্য এই জাম গাছের ছাল ভীষণ উপকারী
একটি উপাদান এক্ষেত্রে আপনি ছাল গুলোকে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে গুড়া
করে নিতে হবে তারপর রোদে শুকিয়ে রেখে দিতে হবে এবং দুই থেকে তিন দিন পর পর আপনার
দাঁত ওই গুঁড়ো দিয়ে মাজতে হবে তাহলে আপনার দাঁতের রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে এই
গুড়া প্রতিদিন ব্যবহার করলে দাঁতে দাগ হতে পারে সেক্ষেত্রে দুই থেকে তিন দিন পর
ব্যবহার করবেন
যদি কারো রক্ত পায়খানা হয় তাহলে এই জাম গাছের ছাল ওষুধ হিসেবে কাজ করবে এজন্য
আপনাকে পরিস্কার ছাল থেকে রস বের করে নিতে হবে এবং দুই থেকে তিন চা চামচ সেই
ঝালের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে তাহলেই দেখবেন আপনার রক্ত পায়খানা বন্ধ
হয়ে গেছে
যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে বিশেষ করে যদি কোন বাচ্চার পেটের সমস্যা হয় তাহলে এই
ছালের রস সামান্য পরিমাণ ঘি এবং চিনি দিয়ে খাওয়াতে হবে তাহলে পেটের সমস্যা দূর
হয়ে যাবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চার থেকে পাঁচ টা ফোটা ছালের রস নিতে হবে
গর্ভ অবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা
- জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যেহেতু জামে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে তাই গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর জন্য জাম একটি উপযোগী খাবার নিচে এর উপকারিতা দেওয়া হল
- জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা হারকে শক্তিশালী এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- নিয়মিত জাম খেলে এটি ডায়রিয়া ও আলসার প্রতিরোধে সহায়তা করে
- জামে পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি রয়েছে যা গর্ভ অবস্থায় শক্তির যোগান দিতে সাহায্য করে তাছাড়াও এটি উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- জামে উচ্চ ফাইবার এবং পানি থাকে যা গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তিতে উন্নতি করতে সাহায্য করে
- জামে ভিটামিন এ রয়েছে যা শিশুর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যোগান দিয়ে থাকে
- , জামে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল রয়েছে যা তাদের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকর আর গর্ভ অবস্থায় জাম খেলে মা ও শিশুর উভয়ের মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়
- জামে উচ্চ ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা অকালে প্রস্রাব এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
শেষ কথা জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা এখন নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন জাম আমাদের জন্য কতটা উপকারী জাম
ফলটি উপভোগ করার পাশাপাশি আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির যোগান দেয় যা আমাদের
শরীর ভালো ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে
আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করুন এরকম আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট
করুন আর্টিকেলটি পড়ে কোন মতামত জানানো থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন
আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url