কচুর শাক খেলে কি উপকার পাবেন ও কি রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবেন তা জানুন
মাঠে-ঘাটে খেতে খেতে বিলে যেখানে সেখানে খুব অযত্নের সাথে বেড়ে ওঠে এই কচু শাক
আমরা অনেকেই কচুশাককে বেশ অবহেলা করে থাকি কিন্তু আপনি যদি কচু শাকের পুষ্টি গুণ
সম্পর্কে জানেন তাহলে আর এই কচুশাককে অবহেলা করতে পারবেন না কচুশাকে রয়েছে
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান এবং খনিজ পদার্থ যা আমাদের শরীরের অনেক ভিটামিনের
ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম
এই কচু শাক শহরের চাইতে গ্রামে বেশি জনপ্রিয় এই কচু এমন একটি সবজি যার সকল অংশ
খাওয়ার উপযোগী তবে কিছু কিছু জায়গায় বোন কচু জন্ম নাই যা খাওয়া বিপদজনক তাহলে
চলুন এখন জেনে নেয়া যাক কত শাকের উপকারিতা সম্পর্কে
সূচিপত্রঃ কচু শাকের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
নিচের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
- কচু শাকের পুষ্টিগুণ
- রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়
- হাড় ও দাঁত গঠনে সাহায্য করে
- রক্তশূন্যতা কমায়
- ভিটামিনের যোগান দেয়
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
- ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়
- জ্বালাপোড়া কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
কচু শাকের পুষ্টিগুণ
আমাদের দেশের সাধারণত দুই ধরনের কচু শাক বেশি পাওয়া যায় একটি হচ্ছে সবুজ এবং
আরেকটি হচ্ছে কালো এই দুটি কচু শাকের পুষ্টিগুণের পরিমাণ আলাদা আলাদা কচু শাখে
রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকুণ যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি
আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময় করতে সহায়তা করে আমরা অনেকেই কচু
শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানিনা তাই ঝোপঝাড়ে বেড়ে ওঠায় এই কচুশাককে অনেকেই
বেশ অবহেলা করে তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক কচুশাকে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে
- প্রতি ১০০ গ্রাম সবুজ কচুশাকে থাকে
- ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন
- ৬.৮ গ্রাম সকারা
- ১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি
- ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
- ১০ মিলিগ্রাম লৌহ
- 0.22 মিলিগ্রাম ভিটামিন বি এক
- ০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ২
- ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
- ৫৬ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি
- এবারে জেনে নিন প্রতি ১০০ গ্রাম কালো কচুশাকে থাকে
- 6.8 গ্রাম প্রোটিন
- ৮.১ গ্রাম ছোকরার
- ২. ০ গ্রাম চর্বি
- 460 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
- ৩৮.৭ মিলিগ্রাম লৌহ
- 0.06 মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ১
- ০.৪৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ২
- ৬৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
- 77 কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে কচু শাক একটি উপযোগী খাবার অনেক সময় দেখা যায়
আমাদের শরীর কারণ অকারনে ই অসুস্থ হয়ে পড়ে বা অস্বস্তি বোধ মনে হয় এর প্রধান
কারণ হচ্ছে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন
আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে থাকে
যা আমাদের বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে তাই
আপনি যদি চান আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে থাকুক তাহলে অবশ্যই
আপনার খাদ্য তালিকায় আপনি কচু শাক রাখতে পারেন কচুশাকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন
আইরন ম্যাঙ্গানিজ পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে
যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি যোগান দিয়ে থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করে আপনি যদি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে অবশ্যই
আপনার খাদ্য তালিকায় কচু শাক রাখতে পারেন
শরীরের হাড় ও দাঁত গঠনের সাহায্য করে
কচু শাক শরীরের হাড় ও দাঁত গঠনে বেশ কার্যকরী কচু শাকে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের
পুষ্টি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের হাড় গঠনে সাহায্য করে
থাকে কচু শাকের সব থেকে বড় একটি উপকারিতা হচ্ছে হাড়ের ক্ষয় থেকে রক্ষা
করা
আরো পড়ুনঃ কচুর শাক শরীরের আরো কি কাজ করে তা জানুন
যদি আপনার হার ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি কচু শাক আপনার খাদ্য
তালিকায় রাখুন যা আপনার হার ক্ষয় হওয়া থেকে বিরতি রাখবে তাছাড়াও শরীরের হাড়
ও দাঁত শক্ত ও মজবুত রাখতে কচু শাক বেশ কার্যকরী কচুশাকে রয়েছে
বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সাইড এবং পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ম্যাঙ্গানিজ আইরন
ক্যালসিয়াম ইত্যাদি যা আমাদের হার এবং দাঁত শক্ত ও মজবুত রাখতে তাছাড়াও ক্ষয়
হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে বেশ ভালো কাজ করে থাকে
রক্তশূন্যতা কমায়
কচু শাক আয়রনের ভালো একটি উৎস আর আমরা সকলেই জানি আয়রন আমাদের শরীরের রক্তের
পরিমাণ বাড়াই তাই কারো শরীরে যদি রক্তের পরিমাণ কম থাকে তাহলে সে নিয়মিত কচু
শাক তার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারে
যা তার রক্তশূন্যতা দূর করতে সক্ষম তাছাড়াও নিয়মিত কচু শাক খেলে রক্তে
অক্সিজেনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায় কারণ কচুশাকে বিদ্যমান হলে ফুলেট এবং আয়রন
শরীরের রক্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াতে নিশ্চিত করে
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা রক্তশূন্যতায় ভুগে আমি তাদের সাজেস্ট করব
নিয়মিত কচু শাক খাওয়ার জন্য যা খুব সহজে এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতেই রক্তশূন্যতা দূর
করতে সহায়তা করবে
ভিটামিনের যোগান দেই
আমাদের শরীরে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি থাকে আর যদি এ
ভিটামিনের ঘাটতি সঠিক সময়ে পূরণ করা না হয় তাহলে আমাদের শরীরে বাধতে পারে
বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ তাই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে
যেন আমাদের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি না পরে আর এই সমস্যা এড়াতে আপনি আপনার খাদ্য
তালিকায় কচুশাক নিয়মিত রাখতে পারেন যা আপনার বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি
পূরণ করবে কচুশাকে রয়েছে
বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ যা আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের
ঘাটতি পূরণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ নিবারণে সহায়তা করে থাকে
আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন যোগান দিতে আমাদের নিয়মিত কচু শাক খাওয়া
উচিত
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
ডায়াবেটিস একটি বেশ জটিল রোগ ডায়াবেটি নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের মাধ্যম
বা পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি তারপরও অনেক সময় দেখা যায় সঠিক ফলাফল পায় না যেমন
আমরা বিভিন্ন ধরনের এক্সারসাইজ হাঁটাহাঁটি এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে বিরতী
থাকে
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস ঠিক রাখতে কচু শাকের ভূমিকা
তারপরও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে না সে ক্ষেত্রে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কোনরকম
মেডিসিন বা ওষুধ ছাড়াই এই কচু শাকের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে
পারবেন তাছাড়াও যাদের ডায়াবেটিস হয়নি তারা যদি নিয়মিত এই কচু শাক তাদের খাদ্য
তালিকায় রাখে তাহলে সামনে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম কেননা কচুশাকে
চিনির পরিমাণ খুবই কম যার ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সক্ষম
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কচু শাক বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার আমাদের সকলের খাদ্য
তালিকায় কচু শাক রাখা উচিত কচু শাকে বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের
বিভিন্ন ধরনের বড় বড় অসুখ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে
তার মধ্যে ক্যান্সার একটি শরীরে ক্যান্সার রোগ সৃষ্টি হতে যে ক্ষতিকর কোষগুলো
জন্ম নেয় সেগুলোর সাথে যুদ্ধ করতে এই কচু শাক সক্ষম তাছাড়াও শরীরের বিভিন্ন
ধরনের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করতে পারেন এবং এগুলোকে খুব
সহজেই নিবারণ করতে পারে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হয়ে থাকে
যেমন স্থানে রক্তে ইত্যাদি ছোটখাটো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে বেশ কার্যকরী এই
কচুশাকে উপস্থিতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিশেষ কিছু উপাদান তাই ক্যান্সারের
ঝুঁকি কমাতে আমাদের বেশি বেশি কচু শাক খাওয়া উচিত
জ্বালাপোড়া কমায়
প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া কমাতে কচু শাক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আমাদের
বিভিন্ন ধরনের জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ হয়ে থাকে যেমন বুক জ্বালা পেট জ্বালা
এসিডিটি ইত্যাদি আর এসব কিছু সারাতে কচু শাক চমৎকার ভূমিকা পালন করে
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের বুক জ্বালাপোড়া করা বা পেট জ্বালাপোড়া করার
সমস্যা রয়েছে যদি আপনারা এই সমস্যা এড়াতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাদের খাদ্য
তালিকায় নিয়মিত কচু শাক রাখুন কচুশাকে রয়েছে বিশেষ একটি অক্সিডেন্ট যা আপনার
বুক জ্বালাপোড়া পেটের জ্বালাপোড়া নিবারণে সহায়তা করে থাকে
কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে এই সমস্যাটি বেশ বড়
একটি সমস্যা এই কোষ্ঠকাঠিন্যর কারণে পরিপাকতন্ত্র ভালো ও সুস্থ থাকতে পারে না যার
কারণে আমাদের শরীরে বাধে বিভিন্ন ধরনের অসুখ
তাই আমাদের চেষ্টা করতে হবে আমরা যেন কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় জড়িয়ে না পরি এজন্য
আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় কচু শাক রাখতে পারেন এই কচু শাক কোষ্ঠকাঠিন্য
নিরাময়ের সহায়তা করে তাছাড়াও যাদের নেই তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা
খুব কম থাকে যদি নিয়মিত ভাবে এই কচু শাক খাওয়া যায়রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
আমরা সকলেই জানি কচুশাকে অনেক পুষ্টি আছে যা মানব দেহের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় একটি খাদ্য এটি এমন এক খাদ্য যা সকল মানুষ খেতে পারে এটির অনেক সুযোগ সুবিধা আছে যেমন দেখা যায়
এই সাতটি গরিব বড়লোক সকল মানুষ এই খেতে পারে কারণ এই চারটি দাম যেরকম কম সেখানে ফলন অনেক বেশি কারণ এইসব সকল জায়গাতেই পাওয়া যায় যার ফলে সকল মানুষেরাই খেতে পারে এই কচুর স্বাদ
কিন্তু এই কচুশাককে ঘিরে নানা রকমের সমস্যার সমাধান করা যায় কারণ কচুশাক মানুষের শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে তাই আমরা দেখতে পাই কচুশাকের কোন তুলনাই নেই যা মানব দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে
শেষ কথা এই কচুর শাক সম্পর্কে সকল তথ্য গুলি জেনে নিন
এই কচুর স্বাদ মানুষের শরীরে অনেক কাজ করে থাকে, যার ফলে আমরা সকল মানুষ মিলে এই কচুশাক খায় যার ফলে আমাদের শরীরের নানা রোগব্যাধি দূর হয়ে থাকে তবে আমরা মনে করি সকল মানুষকে এই শাস্তি খাওয়া উচিত যার ফলে তাদের শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকবে
আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ার পর যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে আমাদের নিচে ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়া হল সেখানে প্রবেশ করে আপনারা আরো অজানা তথ্য জানতে পারেন
অবশেষে শেষ কথা বলতে চাই এই আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার কোন কিছুর আরো জানা থাকে তবে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন ও আপনাদের অন্য বন্ধুদের সাথে তা শেয়ার করতে পারেন ধন্যবাদ আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url