একজন মুসলিম মানুষের জীবনে রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক বন্ধু আপনাকে এই আর্টিকেলে স্বাগতম আপনি কি রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে আমি রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা রোজা রাখে কিন্তু রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা নেই তো চলুন আজকেই এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে
সূচিপত্র: একজন মুসলিম মানুষের জীবনে রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন
নিচের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
- রোজার মাস বরকতের মাস
- বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতী রাখতে সহায়তা করে
- নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে
- দান ও সাদকা করতে আগ্রহী করে তোলে
- ইবাদতে বেশি সময় ব্যয় করতে আগ্রহী করে তোলে
- অন্যের কষ্ট বা অভাব অনুভব করতে শেখায়
- শেষ কথা
রোজার মাস বরকতের মাস
রোজা হচ্ছে বাংলা শব্দ যার আরবি শব্দ হচ্ছে সওম ও বহুবচনে সিয়াম আর সিয়াম শব্দের অর্থ হচ্ছে বিরতি থাকা বছরের বারোটি মাসের মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় মাস হচ্ছে রোজার মাস এই মাসেই পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে তাছাড়াও এই মাসে যে কোন ধরনের দান শাদকা অন্যান্য দিনগুলোর তুলনায় এর মর্যাদা ও গুরুত্ব দ্বিগুণ
এই মাস এজন্যই এত বেশি বরকতময় ও মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাস কেননা এই মাসে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন আর জান্নাতের দরজা খুলে দেন এবং শয়তানকে শিকল বন্দি করে রাখেন তাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বেঁচে থাকা অনেক সহজ হয় মহান আল্লাহতালা পবিত্র কালামে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে শয়তান হচ্ছে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু আর তিনি আরো জানিয়ে দিয়েছেন যে শয়তান তোমাদের শত্রু আর তাকে তোমরা শত্রু হিসেবেই গ্রহণ করো
আরো পড়ুনঃ রোজা পালনকারীকে আল্লাহতালা কি পুরস্কার দিবেন
সে সব সময় চাইবে তোমাদের দিয়ে খারাপ কাজ করাতে যাতে করে তোমরা বিপাকে পড়ো সে চায় মানুষের মধ্যে ঝগড়া মারামারি মদ জুয়া মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি খারাপ কাজে লিপ্ত রাখতে আমরা সবাই চাইলে খুব সহজেই এই রমজান মাসে যে কোন ধরনের খারাপ কাজ থেকে খুব সহজেই বিরতি পারি কেননা এ সময় শয়তান আমাদের কুমন্ত্রণা দিতে পারে না তাছাড়াও এই মাসে যদি কেউ দান ও সাদকা করে তাহলে তার সব দ্বিগুণ পাওয়া যায়
বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতি রাখতে সহায়তা করে
রোজা বা সিয়াম আমাদের যেকোন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতি রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে কেননা যখন একজন মুসলিম মানুষ রোজা রাখে তখন সে অবস্থায় সে যদি কোন ধরনের খারাপ কাজ করে তাহলে তার মনে হয় যে আমি রোজা আছি আর এই অবস্থায় আমার খারাপ কাজ করা যাবে না আর যদি খারাপ কাজ করি তাহলে আমার রোজা থাকবে না কেননা রোজা মানে যে শুধুমাত্র সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে বিরতি থাকা এমনটা মোটেই নয়
রোজা হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যা রাখলে যে কোন ধরনের খারাপ কাজ থেকে আপনাকে বিরতি থাকতে হবে সিয়াম শব্দের অর্থই হচ্ছে সকল ধরনের কাজকে পরিশুদ্ধি করা অর্থাৎ আপনি রোজা অবস্থায় যে সকল কাজ করবেন সেগুলি সবকিছু হালাল হতে হবে এবং ভালো হতে হবে তাই বলা যায় যে অবশ্যই যে কোন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতি থাকতে রোজা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম রোজা থাকা অবস্থায় কোন মুসলিম মানুষ সহজে কোন খারাপ কাজে লিপ্ত হবে না যদি তার মধ্যে ঈমান থাকে
নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে
আমাদের মধ্যে অনেককে এরকম দেখা যায় যে ১১ মাস নামাজ পড়ুক বা না পড়ুক রোজার মাস কিন্তু নামাজ পড়বেই পড়বে আসলে রোজা বা সিয়াম এমন একটি মাধ্যম যা মানুষকে সকল ধরনের ভালো কাজে উৎসাহিত করতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে অন্যান্য মাসে তুলনাই রোজার মাসে নামাজ বেশি থাকে তারপরও দেখা যায় সকলেই এই রোজার মাসেই নামাজ বাদ দিতে চায় না আসলে এর প্রধান কারণ হচ্ছে রোজা রাখা যে মুসলিম ব্যক্তি রোজা রাখবে সে অবশ্যই পাঁচ ওয়াক্তই নামাজ আদায় করবে
আরো পড়ুনঃ রোজা রেখে নামাজ না পড়লে কি হয়
কেননা প্রত্যেকটা মুসলিম ব্যক্তিই জানে যে নামাজ ছাড়া ইসলাম হয় না আমাদের ধর্ম এবং অন্যান্য ধর্মের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে নামাজ যখন একজন মুসলিম ব্যক্তির রোজা রাখে তখন সে চায় তার রোজাটি যেন পরিপূর্ণভাবে সার্থক হয় এবং আল্লাহ তা'আলা তাঁর রোজাটি কবুল করে আর এজন্য নেই সে সকল ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতি থাকে এবং ভালো কাজে লিপ্ত থাকে ও ইবাদতে মগ্ন থাকে বিশেষ করে নামাজে তাই অবশ্যই বলা যায় যে রোজা নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলে
দান ও সাদকা করতে আগ্রহী করে তোলে
আমাদের সকলের জানা রমজান মাস আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও বরকত ময় মাস আল্লাহ তাআলা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে বাকি ১১ মাস আমরা যে দান ও সাদকা করে যে সোয়াব পাই যদি সেই দান ও সাদকা রমজান মাসে করা হয় তাহলে তার চেয়ে ডবল নেকি আমরা পাই
তাই যে কোন মুসলিম মানুষই রমজান মাসে বেশি বেশি দান ও সাদকাত করতে চাই তাই সাধারণত এমনিই দিন গুলোতে বা মাছ গুলোতে যে দান বা সাদা করা হয় না কিন্তু রমজান মাসে দেখা যায় ঠিকই বেশি বেশি দান করা হয়
ইবাদতে বেশি সময় ব্যয় করতে আগ্রহী করে তোলে
রোজা বা সিয়াম মানুষকে ইবাদতে বেশি সময় ব্যয় করতে আগ্রহী করে তোলে কেননা রোজা রেখেই মানুষ বেশি বেশি ইবাদতে মগ্ন থাকে যেমন কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করা নামাজ পড়া দান ও সাদকা করা ইত্যাদি আর এই ধরনের ইবাদত গুলো মানুষ বেশি এই রমজান মাসেই করে থাকে যদি বা এ ধরনের ইবাদতগুলি আমাদের সারা বছরই বা সব সময় করা উচিত
আরো পড়ুনঃ কোন ইবাদতের মাধ্যমে বেশি সওয়াব অর্জন করা যায়
তারপরও বিভিন্ন ধরনের কাজ ও ব্যস্ততার কারণে দেখা যায় এসব করা হয় না তবে রমজান মাসে অবশ্যই সকল মুসলিম মানসী এই ধরনের ইবাদতে মগ্ন থাকে তাই বলা যায় যে অবশ্যই রোজা যেকোনো ধরনের ইবাদতে বা ভাল কাজে বেশি বেশি আগ্রহী করে তোলে
অন্যের কষ্ট বা অভাব অনুভব করতে শেখায়
আমাদের সোসাইটিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ রয়েছে যেমন উচ্চবিত্ত পরিবার মধ্যবিত্ত পরিবার ও নিম্ন বৃত্ত পরিবার সাধারণত আমাদের সমাজের উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষদের কোন ধরনের অভাবের সম্মুখীন হতে হয় না এবং তারা সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে ফলে তারা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কষ্ট বা অভাব অনুভব করতে পারে না কিন্তু এই রোজার মাস সেই সকল পরিবারকেও এই কষ্ট বা অভাব অনুভব করে
কেননা যখন সে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন ধরনের খাবার গ্রহণ করবে না তখন সে বুঝতে পারবে যে অভাবের কারণে যারা খেতে পারেনা তারা কি ধরনের কষ্ট মধ্যে থাকে বা তাদের কতটা অভাব হলে তারা খাবার খেতে পারে না তাই রমজান মাসে আমাদের সমাজে থাকা উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষগুলি অনুভব করতে পারবে যে নিম্নবর্তী পরিবারের কষ্ট ও অভাব সম্পর্কে
শেষ কথা একজন মুসলিম মানুষের জীবনে রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা নিশ্চয়ই এখন আপনারা বুঝতে পারছেন যে একজন মুসলিম মানুষের জীবনে রোজার গুরুত্ব কতটুকু যদি আপনি রোজা রাখেন তাহলে এটি আপনার ইহকাল ও পরকাল দুই কালের জন্যই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কেননা রোজার মাধ্যমে ইহকালে আপনি বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরতি থাকবেন এবং ইবাদতে মগ্ন থাকতে সহায়তা করবে পরকালে সুন্দর জীবন উপহার দেবে
তাই অবশ্যই চেষ্টা করুন রোজা রাখার এবং বেশি বেশি ইবাদতে ও ভালো কাজের সাথে লিপ্ত থাকার যা পরকালে আপনাকে একটি সুন্দর জীবন উপহার দেবে
আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না এরকম আরো ইসলামিক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন
এতক্ষণ এই আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং ইবাদতের ও ভাল কাজের সাথে যুক্ত থাকুন আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url