শবে কদর রাত্রে কি কি করণীয় ও কি কি বর্জনীয় তা জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম আপনাকে এই আর্টিকেলে স্বাগতম আপনি কি শবে কদর রাত্রে কি কি করবেন আর কি কি করবেন না তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাহলে আমাদের আর্টিকেলের সাথেই থাকুন কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শবে কদর রাত্রে কি কি করনীয় ও কি কি বর্জনীয় তা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা শবে কদর রাত উদযাপিত করে থাকে কেননা এই রাত আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাত তাই আমাদের অবশ্যই সকলে জানা উচিত এ রাতে কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়
সূচিপত্র: শবে কদর রাত্রে কি কি করণীয় ও কি কি বর্জনীয় তা জেনে নিন
নিজের যে অংশ পড়তে চান ক্লিক করুন
- শবে কদর কি
- শবে কদর রাত কখন আসে
- শবে কদর রাতে কি কি করণীয়
- শবে কদর রাত্রে কি কি বর্জনীয়
- শেষ কথা
শবে কদর কি
শবে কদর রাত্রে কি কি করতে হবে? আর কি কি করতে হবে না এটি জানার আগে সর্বপ্রথমে আমাদের জানা প্রয়োজন যে শবে কদর কি আমরা প্রত্যেক মুসলমান মানুষ জানি যে শবে কদর কি এবং এর সাথে আমরা খুব ভালোভাবেই পরিচিতি এই সবে কদর রাত্রি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাত এই রাত্রে আমাদের পবিত্র কুরআন মাজীদ নাযিল করা হয়েছিল
সবে শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত বা রজনী এবং কদর শব্দের অর্থ হচ্ছে সম্মান ভাগ্য গুনাগুন মর্যাদা ইত্যাদি অর্থাৎ শবে কদর শব্দের অর্থ হচ্ছে সম্মানীয় রাত বা ভাগ্য রজনী শবে কদর শব্দটি হচ্ছে ফারসি শব্দ আর এর আরবি শব্দ হচ্ছে লাইলাতুল কদর অনেকেরই ধারণা এই রাত্রে আমাদের ভাগ্য লিখা হয়ে থাকে এক বছরের জন্য তাই একে ভাগ্য রজনী বলা হয়
শবে কদর রাত কখন আসে
শবে কদর রাতটি প্রত্যেকটা মুসলমান মানুষের জন্য আল্লাহ তরফ থেকে একটি বিশেষ উপহার বলা যেতে পারে কেননা এক বছরের আপনি ইবাদত করার পর আল্লাহর কাছ থেকে জে নেকি অর্জন করতে পারবেন তা থেকেও বেশি নাকি অর্জন করতে পারবেন এই রাত্রে ইবাদতের মাধ্যমে তাই অবশ্যই বলা যায় এই রাতটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত
আমরা অনেকেই শবে কদর রাত্রিতে কি করতে হয় এবং কি করতে হয় না সেগুলি না জানলেও শবে কদরের সাথে আমরা সকলেই পরিচিত শবে কদর রাত প্রত্যেকটি মুসলিম মানুষের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ তাই অবশ্যই আমাদের সকলের উচিত এই রাত পরিপূর্ণভাবে ইসলামে অর্থাৎ আল্লাহর ইবাদত এ মগ্ন থাক
আরো পড়ুনঃ শবে কদর রাতের করণীয় কি কি
বিভিন্ন সহী হাদিস থেকে জানা যায় যে শবে কদর রমজান মাসের শেষ দশকের বিজড়া রাত্রি গুলোর মধ্যে একটিতে রয়েছে বিজোড়া রাত্রিগুলো বলতে বোঝানো হয়েছে রমজান মাসের শেষ দশকের ২১ ২৩ ২৫ ২৭ ২৯ রমজানের রাত আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পাঁচ রাতের মধ্যেই শবে কদর রাত খুঁজতে বলেছেন এবং এই রাত্রে বেশি বেশি আল্লাহ তায়ালার সাথে যুক্ত থাকতে অর্থাৎ ইবাদত করতে বলেছেন
শবে কদর রাত্রে কি কি করনীয়
শবে কদর রাত্রির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত হলেও আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা সঠিকভাবে জানে না যে শবে কদর রাত্রে কি কি করা উচিত আর কি কি করা উচিত নয় এই রাত যেহেতু আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানীয় রাত তাই অবশ্যই এই রাত্রে কি কি করনীয় এবং কি কি করনীয় নয় সকলেরই জানা থাকা প্রয়োজন
এই রাত্রে এবাদত করার জন্য সর্বপ্রথমে নিজেকে পরিষ্কার ও পবিত্রতা অর্জন করতে হবে কেননা অপবিত্র অবস্থায় থাকলে এবাদত হবে না তাই শুধু নিজেই পবিত্রতা অর্জন করলে হবে না আপনি যে জায়গায় এবাদত করবেন সেই জায়গা দিও পরিষ্কার ও পবিত্রতা হতে হবে তাই সর্বপ্রথম ইবাদত করার জন্য নিজেকে এবং ইবাদত করার জায়গা পবিত্রতা করে নিন
যখন সূর্য অস্ত যাবে তখন অর্থাৎ মাগরিবের নামাজের পর থেকেই ইবাদতের জন্য প্রস্তুত হতে হবে যেহেতু শবে কদর রাত্রে কুরআন মাজীদ নাযিল হয়েছে তাই অবশ্যই এই রাতে বেশি বেশি কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করার চেষ্টা করতে হবে
আরো পড়ুনঃ শবে কদর রাতকে কেন ভাগ্য রজনী বলা হয়
নামাজ আল্লাহ তাআলার কাছে অনেক পছন্দের একটি ইবাদত তাই এই রাত্রিতে অবশ্যই বেশি বেশি নামাজ আদায় করার চেষ্টা করুন নফল নামাজ কিংবা তাহাজ্জুদের নামাজ হিসেবেও পড়তে পারে এই নামাজের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন নামাজের মধ্যে যে সূরা গুলো তেলাওয়াত করবেন সেগুলি শুদ্ধ হয় এবং তাড়াহুড়া করে নামাজ পড়বেন না বেশি সময় নিয়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন বিশেষ করে সেজদায়
যখন কোন বান্দা সেজদায় থাকে তখন আল্লাহ তাআলার সব থেকে বেশি নিকটে থাকে তাই বেশি সময় ধরে সেজদায় থাকার চেষ্টা করুন সারা বছর সারাক্ষণ আমরা জেনে ও অজান্তেই যে গুনাগুলো করে থাকি সেগুলোর কারণে আল্লাহতালার কাছে এই রাত্রে বেশি বেশি ক্ষমা চাওয়া উচিত
সেই রাত্রে বেশি বেশি জিকির করতে পারেন কতগুলো ছোট ছোট জিকির বা দোয়া রয়েছে যেগুলি আল্লাহর কাছে ভীষণ পছন্দনীয় এবং এগুলো ওজন অনেক বেশি এই রাত্রে যে জিকির গুলো আপনি করতে পারেন সেগুলি নিজে উল্লেখ করা হলো
- সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
- আস্তাগফিরুল্লাহ
- সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদুহু ওয়াও ওয়ালা কুল্লি শাহিন কাদির
- সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহি আজিম
- লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
- বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
- ইস্তেগফার পাঠ করা
- সূরা ইখলাস পাঠ করা
- দোয়া ইউনুস পার্ট করা ইত্যাদি
এই জিকির বা দোয়া গুলো খুব ছোট ছোট হলেও এগুলির দাম ও গুরুত্ব অনেক বেশি এবং এই জিকির গুলো আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয় তাই এইগুলো আপনি এই শবে কদর রাত্রে বেশি বেশি করতে পারে আপনি চাইলে 200 বার 500 বার যত বেশি পারেন করার চেষ্টা করবেন
শবে কদর রাতে কি কি বর্জনীয়
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা জানে না যে শবে কদর রাত্রি কিভাবে উদযাপন করতে হবে অর্থাৎ এই রাত্রে কি কি করা উচিত এবং কি কি করা উচিত নয় এই রাত্রি আমাদের সকলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানীয় রাত তাই অবশ্যই এ রাত্তি খুবই গুরুত্বের সাথে এবং সাবধানে ব্যয় করা উচিত
আর আমরা যদি সঠিকভাবে না জানি যে এই রাত্রে কি করতে হবে এবং কি করতে হবে না তাহলে এই রাত্রি কখনোই ভালোভাবে পার করতে পারবোনা তাই আমাদের সকলেরই জানা উচিত নেই এই রাত্রে কি কি করা যাবে না তো চলুন আমরা যারা জানি না শবে কদর রাতে কি কি করব না বা কি কি করা থেকে বিরতি থাকা উচিত তা জেনে নিন
অনেক কিছুই আছে যেগুলি থেকে আমাদের বিরতি থাকা উচিত এ রাত্রে নিজে এগুলি আলোচনা করা হলো
এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিল উৎপন্ন রাত্র অবহেলায় পাঠিয়ে না দেওয়া শবে কদর রাত্রি আল্লাহর তরফ থেকে আমাদের জন্য বিশেষ একটি উপহার বলা যেতে পারে কেননা সারা বছর এবাদত করলে যে মেয়েটি আমরা অর্জন করতে পারব এই এক রাতে এবাদত করে সেই সকল নাকি অর্জন করা সম্ভব তাই অবশ্যই এই রাতটিকে অবহেলা করা যাবে না গুরুত্বের সাথে এই রাতটিকে উদযাপন করা উচিত
আরো পড়ুনঃ শবে কদর রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
এই রাত্রে নামাজ পড়ার নাম করে একাধিক মানুষ একসাথে মিলে নামাজ পড়ার নামে চিল্লা পাল্লা
করা যাবে না অনেক সময় অনেক জায়গায় এরকম দেখা যায় যে এই রাতে এবাদত করার জন্য বা নামাজ পড়ার জন্য বেশ কিছু মানুষ একসাথে হয় আর দেখা যায় সেখানে ইবাদতের দায়িত্ব বেশি চিৎকার এবং গল্পগুজব ও গীবত বেশি হয় তাই অবশ্যই এই রাত্রে চিৎকার চেঁচামেচি না করে নীরবে যার যার মত নামাজ ও ইবাদতে মগ্ন থাকা উচিত
আবার অনেককে এমনও দেখা যায় যে শবে কদর রাত জাগে কিন্তু ইবাদতের মাধ্যমে নয় যেমন টিভি দেখা বা ফোন দেখা কিংবা গেম খেলা গল্প গুজব করা ইত্যাদি যদি কেউ শবে কদর রাত জাগার জন্য এই মাধ্যমগুলো গ্রহণ করে থাকে তাহলে একদম বেকার বরং এগুলি আরো ক্ষতি করবে তাই যদি এই রাত জাগতেই হয় তাহলে অবশ্যই আল্লাহর এবাদত করতে হবে অন্য কিছু ভাবে এই রাত যাবে না
শেষ কথা: শবে কদর রাত্রে কি কি করণীয় ও কি কি বর্জনীয় তা জেনে নিন
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, শবে কদর রাত্রি সকল মুসলমান মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাত তাই অবশ্যই এ রাত অবহেলা না করে গুরুত্বের সাথে পালন করা উচিত এখন আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে শবে কদর রাতে কি কি করা উচিত এবং কি কি করা উচিত নয় তাই অবশ্যই এই নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করুন এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করুন
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল ও ইসলামিক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট টিতে নিয়মিত ভিজিট করুন
এতক্ষণ এই আর্টিকেলের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করুন আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url